কিডনি রোগীদের জন্য বিপদ যে ৫ খাবারে

অনলাইন ডেস্ক

কিডনি ব্যর্থতার ক্রমবর্ধমান ঘটনা সরাসরি খাদ্যাভ্যাসের পছন্দের সঙ্গে সম্পর্কিত। তরুণদের মধ্যে এই সমস্যাটি বেশি দেখা যায়। নির্দিষ্ট খাবার নিয়মিত খাওয়ার ফলে এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর ওপর দীর্ঘস্থায়ী চাপ পড়ে এবং কিডনির ক্ষতি হয়।

বিপজ্জনক খাবার সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে কিডনির ওপর তাদের নির্দিষ্ট প্রভাব জানাসহ তাদের স্বাস্থ্য রক্ষা করা যেতে পারে।

এখানে পাঁচটি খাবারের তালিকা দেওয়া হলো, যেগুলো বিশেষজ্ঞরা তরুণদের মধ্যে কিডনি ব্যর্থতার হার বৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত করেছেন।
প্রক্রিয়াজাত ও টিনজাত খাবার

মানুষ প্রক্রিয়াজাত ও টিনজাত খাবার পছন্দ করে, কারণ তারা তাদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে। কিন্তু এই পণ্যগুলোতে উচ্চ মাত্রায় সোডিয়াম থাকে। রক্ত পরিশোধনের জন্য শরীরকে আরো বেশি পরিশ্রম করতে হয়, যখন সোডিয়ামের মাত্রা অতিরিক্ত হয়ে যায়, যার ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায়।

যারা ইতিমধ্যেই তাদের জীবনযাত্রার ঝুঁকির সম্মুখীন, তারা অতিরিক্ত কাজের চাপের কারণে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি চাপের কারণে দ্রুত কিডনির ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। টিনজাত স্যুপ, রেডি-টু-ইট খাবার এবং সংরক্ষিত শাক-সবজিতে সোডিয়ামের পরিমাণ স্বাভাবিক মাত্রা ছাড়িয়ে যায়, কারণ নির্মাতারা মেয়াদ বাড়ানোর জন্য লবণ যোগ করে, যা ভোক্তাদের কাছে প্রকাশ করে না। কিডনি রক্ষা করার জন্য মানুষের কম সোডিয়ামযুক্ত বিকল্প নির্বাচন করা এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া কমানো প্রয়োজন।

চিনিযুক্ত পানীয় ও সোডা

অনেক তরুণ-তরুণী সোডা ও এনার্জি ড্রিংকের মতো চিনিযুক্ত পানীয় পান করার প্রবণতা পোষণ করে, যা তাদের কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য নীরব বিপদ ডেকে আনে।

এই পানীয়গুলোতে উচ্চ চিনির পরিমাণ রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে, যার ফলে স্থূলতা ও ডায়াবেটিস হয়। এটি বিশ্বব্যাপী কিডনি ব্যর্থতার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কিছু সোডাতে ফসফরিক এসিডের উপস্থিতি কিডনির কার্যকারিতার ওপর সরাসরি ক্ষতি করে। কারণ এটি অতিরিক্ত শরীরের এসিডিটি তৈরি করে, যা কিডনির টিস্যুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। নিয়মিত এই পানীয়গুলো গ্রহণ করলে তরুণদের কিডনির প্রাথমিক ক্ষতি হয়, তাই এগুলো পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত অথবা সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে চলা উচিত।

ফাস্ট ফুড ও অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার

ফাস্ট ফুড ও অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে তরুণরা তাদের কিডনির সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। কারণ এই পণ্যগুলোতে অতিরিক্ত লবণ, অস্বাস্থ্যকর চর্বি ও ফসফরাস সংযোজন ও প্রিজারভেটিভ থাকে। এই খাবারগুলো খাওয়ার ফলে কিডনিতে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস ও প্রদাহ হয়, যার ফলে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ (সিকেডি) হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রচুর পরিমাণে অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার ফলে কিডনির কার্যকারিতা দ্রুত অবনতি হয় এবং এসিডোসিস ও উচ্চ রক্তচাপসহ বিপাকীয় সমস্যা তৈরি হয়। ফাস্ট ফুড গ্রহণ কমানোর সঙ্গে সঙ্গে সম্পূর্ণ তাজা খাবার গ্রহণ কিডনির কার্যকারিতার ওপর চাপ কমাতে সাহায্য করে।

পটাশিয়াম ও ফসফরাস সমৃদ্ধ খাবার
পুষ্টিকর খাবার অ্যাভোকাডো, কলা ও বাদামে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও ফসফরাস থাকে। এই খনিজগুলোর স্বাভাবিক পরিমাণ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে সেবন বা কিডনির কর্মহীনতা কিডনিতে ক্ষতিকারক জমার দিকে পরিচালিত করে।

প্রক্রিয়াজাত খাদ্য সংযোজন থেকে উচ্চ ফসফরাস স্তরের সংমিশ্রণ ফাইব্রোসিস ও প্রদাহ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কিডনির ক্ষতি করে। কিডনির সমস্যায় ভুগছেন এমন তরুণ ব্যক্তিরা, অথবা যারা ঝুঁকিতে আছেন, তাদের উচ্চ ফসফরাসযুক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে দূরে থাকা এবং তাদের খনিজ গ্রহণ সম্পর্কে চিকিৎসা পরামর্শ অনুসরণ করা উচিত।

অতিরিক্ত লবণ

রান্নায় অতিরিক্ত লবণ ব্যবহার করলে এবং চিপস, আচার ও লবণাক্ত বাদামের মতো নোনতা খাবার গ্রহণ করলে বিপজ্জনক লবণের পরিমাণ জমে যায়। অতিরিক্ত লবণ গ্রহণের ফলে পানি ধরে রাখা ও রক্তচাপ বৃদ্ধির সংমিশ্রণ কিডনির ওপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করে। তরুণরা নিয়মিত নোনতা খাবার খায়, এই খাবারগুলো তাদের কিডনির জন্য কতটা ক্ষতিকর তা না জেনে।

খাবারের স্বাদ বাড়াতে লবণের পরিবর্তে ভেষজ ও মশলা ব্যবহার করলে কিডনির স্বাস্থ্য বজায় থাকে এবং অকাল কিডনি বিকল হওয়ার সম্ভাবনা কমে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *