অনলাইন ডেস্ক
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে আলেম ওলামারা ‘কওমি জননী’ উপাধি দিয়েছিলেন দেখে দুঃখ হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ (শনিবার) দুপুরে আইডিইবির মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা ১৫/১৬ বছর ধরে দেখেছি, ফ্যাসিস্ট হাসিনা কী করে প্রতিটি মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আমার ধর্ম পালনের অধিকার পর্যন্ত কেড়ে নিয়েছে। তারপর আবার দাবি করে যে তারা ইসলামের পক্ষে কাজ করেছে। আরও দুঃখ হয় তখন, যখন দেখি আমাদের দেশেরই কিছু আলেম ওলামারা তার সঙ্গে মিটিং করে তাকে কওমি জননী উপাধি দিচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, ১৫/১৬ বছর দেখেছেন, কিভাবে একটা ফ্যাসিস্ট শক্তি বাংলাদেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে নষ্ট করে দিয়েছে। সব জায়গায় সে তার নিজের লোক, তার দলের লোক, তার নিজের লোককে বসানোর চেষ্টা করেছে। এ বসানোর চেষ্টা করতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে ফেলেছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন তো সবচেয়ে মর্যাদাশীল ঐতিহ্যবাহী একটি প্রতিষ্ঠান। সেখানে যদি আপনার দলীয় লোককে বসানো হয়, পার্টির লোককে বসানো হয়, যারা বাইরে ইসলামের কথা বলবে কিন্তু মুখে ইসলাম বিশ্বাসই করে না। তাহলে তো সেটা সঠিকভাবে চলবে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৫/১৬ বছরের দানবীয় একটা শাসন, সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছি। আপনাদের আলেম ওলেমা অনেকে মারা গেছেন, জেল খেটেছেন, ফাঁসি হয়েছে, জঙ্গি চিহ্নিত করে বছরের পর বছর জেলে থাকতে হয়েছে, আমরা যারা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছি, আমাদেরও একই পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে। সেই অবস্থায় আমরা সকলে আন্দোলন করে আমাদের ছেলেরা জীবন দিয়ে, প্রাণ দিয়ে, একটা পরিবর্তন নিয়ে আসছেন। এই পরিবর্তনটাকে আমরা কাজে লাগাতে চাই। এই সুযোগটাকে ব্যবহার করে আমরা দেশে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা পার্মানেন্ট করতে চাই।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন নির্বাচন হবে এবং সেটা ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনের জন্য তারা আগে দেখেছেন সংস্কার কমিশন করা হয়েছিল। সংস্কার কমিশন খুব বড় বড় পন্ডিতরা দেশে এসেছে, বিদেশ থেকেও এসেছে। তারা ৯ মাস ধরে আলাপ-আলোচনা করেছে। অনেক সংস্কারের কথা বলেছে। সবশেষে যেটা বলেছে, এটা আমরা বুঝি না। দেশের মানুষ অনেকেই বুঝতে পারে না।
মানুষ পিআরের সঙ্গে পরিচিত না মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বোঝে ওয়ান ম্যান ওয়ান ভোট। একজন ব্যক্তি দাঁড়াবে তার মার্কা থাকবে, মার্কে আমি ভোট দেব৷ সেই আদিকাল থেকে দেখে আসছি। এখন আপনি এটাকে পরিবর্তন করবেন, তার জন্য গণভোট করবেন, গণভোটে হ্যাঁ-না প্রশ্ন থাকবে। গণভোটের চারটা প্রশ্ন থাকবে। চারটা প্রশ্ন একটা গণভোটের ব্যালটে, এটা মানুষ এখন পর্যন্ত বুঝতেই পারছে না৷ কেউ বুঝতে পারছে না। শেষদিন পর্যন্ত বুঝতেও পারবে না। দেখবেন শেষদিন পর্যন্ত কেউ বুঝতেও পারবে না।
‘একটা রাজনৈতিক দল সমানে চিৎকার করছে। পিআর দিতে হবে। পিআর দিতে হবে। পিআর না হলে নির্বাচন হবে না। অনেক হুংকার টুংকার হয়েছে তাই না? এখন আবার সুর নরম হয়ে গেছে। এখন দেখা যাচ্ছে, নির্বাচনের জন্য সব চতুর্দিকে দৌড়, ঢাকডোল চলছে। তাইতো? এই জিনিসগুলো ঠিক না। মানুষকে বোকা বানিয়ে ভুল পথে পরিচালিত করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘জামায়াতের টিকিট কাটলে জান্নাতের টিকিট কাটা হবে, এটা কোথায় আছে আমাকে বলুক। দেখিয়ে দিক কোথায় আছে। এটা ঠিক না। ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা নিয়ে নেওয়া, এটা কখনোই ইসলাম এই কথা বলে না।’
চট্টগ্রামে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার, যুবদল নেতার জিডি
স্বৈরাচার সরকার দেশের অর্থনীতি খালি করে দিয়েছে
তারেক রহমানের জন্মদিনে ব্রিটিশ ল’ স্টুডেন্টসের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
জামায়াতকে ইঙ্গিত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, একটি মহল, তারা কিন্তু রাজনৈতিক অঙ্গনে দাঁড়াতেই পারছিল না। আমাদের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তাদের সুযোগ করে দেন রাজনৈতিক অঙ্গনে আসার। তারা আমাদের সঙ্গেও কাজ করেছেন। আমরাও তাদের নিয়ে কাজ করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে গত ১০ বছরে কিন্তু আমরা তাদের এই ফ্যাসিস্টদের পরাজিত করবার জন্য দৃশ্যমান কোনো কাজ দেখিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনে শুনতে পাই ছাত্রলীগের মধ্যে তারা ঢুকেছিল। শুনেছি, আমার জানা নেই। আমরা সরাসরি সামনাসামনি লড়াই করেছি। আমাদের ৬০ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। আমাদের ২০ হাজার লোককে হত্যা করা হয়েছে। প্রায় ১৭০০ মানুষকে, নেতা, আমাদের এমপিসহ অনেককে গুম করে দেওয়া হয়েছে। আমরা ২০০, ৩০০, ৪০০ মামলা নিয়ে আছি।













Leave a Reply