সর্বোচ্চ রেটিং পেল মাত্র দু’দিনেই শেষ হওয়া টেস্টের উইকেট

অনলাইন ডেস্ক

অ্যাশেজের ইতিহাসে প্রথমবার প্রথম দিনেই ১৯টি উইকেট পড়ার নজির গড়েছিল পার্থ টেস্ট। শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের ম্যাচটি মাত্র দু’দিনেই শেষ হয়ে যায়। ১০৪ বছর পর ঐতিহ্যবাহী অ্যাশেজের ইতিহাসে কেউ দুই দিনের মধ্যে টেস্ট পরাজিত হয়েছে। ট্রাভিস হেডের ঝোড়ো সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটের বড় জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচ শেষে পার্থের সেই উইকেট নিয়ে আলোচনা চলছিল। অথচ আইসিসি তাদের সর্বোচ্চ রেটিং দিয়েছে।

ম্যাচ রেফারি রঞ্জন মাদুগালে তার প্রতিবেদনে পার্থ স্টেডিয়ামের উইকেটকে ‘খুব ভালো’ গ্রেড দিয়েছেন। কোনো ম্যাচের উইকেট ও আউটফিল্ড নিয়ে চার স্তরের রেটিং পদ্ধতি রয়েছে আইসিসির। এর মধ্যে সর্বোচ্চ রেটিং হচ্ছে– ‘খুব ভালো’। কোনো উইকেট এই রেটিং পেতে হলে– বল খুব ভালো খেলা যায়, সিম মুভমেন্ট কম থাকে এবং ম্যাচের শুরু থেকে ধারাবাহিক বাউন্স বল দেওয়ার মতো পরিবেশ থাকতে হবে। সবমিলিয়ে এই ধরনের উইকেটে ব্যাটার-বোলারদের মাঝে ভারসাম্যপূর্ণ প্রতিযোগিতা থাকে।

যদিও পার্থ টেস্টের প্রথমদিন পুরোদমে রাজত্ব করেছে বোলাররা, অ্যাশেজের ইতিহাসে এবারই প্রথম প্রথমদিনেই ১৯ উইকেটের পতন হয়। দ্বিতীয় আগ্রাসী খেলায় ইংলিশ বোলারদের আর সুযোগ দেননি অজি ব্যাটার হেড। ১৬টি চার ও ৪টি ছক্কার মারে তিনি মাত্র ৮৩ বলে ১২৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সর্বনিম্ন ৮৪৭ বলে ম্যাচ শেষ হওয়ার নজিরও গড়ে পার্থ টেস্ট। অজি অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ ম্যাচ শেষে বলেন, ‘দ্বিতীয় দিনের শেষদিকে এই উইকেট বেশ ভালো হয়েছে, সম্ভবত শেষ দিকের জন্য নিজের সেরাটা বরাদ্দ রেখেছিল। গত বছরও আমরা একই আচরণ দেখেছি।’

আইসিসি ম্যাচ রেফারির দেওয়া সর্বোচ্চ রেটিং পেয়ে হাফ ছেড়ে বাঁচলেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) ক্রিকেট প্রধান জেমস অলসোপ, ‘ম্যাচ রেফারির “খুব ভালো” রেটিং পার্থ স্টেডিয়াম নিয়ে আমাদের যে বিশ্বাস, তাতে ন্যায়বিচার দিয়েছে। কারণ এখানে ব্যাট-বলের মাঝে ভালো ভারসাম্য থাকার উপযোগী উপাদান আছে। ‍উভয় দলের দুর্দান্ত কিছু পেস বোলিং পারফরম্যান্সের কারণে তাদের দাপট দেখা গেছে এবং ছাড় না দেওয়ার মানসিকতার কারণে মাত্র দু’দিনেই ফল পেয়েছে পার্থ টেস্ট।’

মাত্র দু’দিনে শেষ হওয়া টেস্টে জিতলেও, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া বড় অঙ্কের অর্থ হারিয়েছে। সেই লোকসানের পরিমাণ অন্তত ৩ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৪ কোটি টাকা। ফলে রোমাঞ্চকর অ্যাশেজের লড়াইয়ে এগিয়ে গেলেও ক্ষতিটা মানতে হচ্ছে স্বাগতিকদের। কেবল তৃতীয় ও চতুর্থ দিনের হিসাবেই অস্ট্রেলিয়ার ৩ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে দেশটির সংবাদ সংস্থা এএপি। পার্থ টেস্টের প্রথম দিনে ৫১৫৩১ এবং পরদিন ৪৯৯৮৩ মিলিয়ে রেকর্ড ১ লাখ ১৫১৪ দর্শক খেলা দেখতে এসেছিলেন। যা ভেঙে দিয়েছে গত বছর পার্থে চার দিনে শেষ হওয়া অস্ট্রেলিয়া-ভারত টেস্টের রেকর্ড। সবমিলিয়ে সেখানে ৯৬৪৬৩ দর্শক ছিল।

পার্থে মাত্র দুই দিনেই প্রথম টেস্ট শেষ হয়ে যাওয়ায়, তৃতীয় দিনের টিকিট কাটা ৬০ হাজার দর্শকের মাথায় হাত। সেজন্য অবশ্য ম্যাচ শেষে ক্ষমা চেয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সেঞ্চুরিয়ান ব্যাটার হেড, ‘আমি ৬০ হাজার দর্শকের জন্য কষ্ট পাচ্ছি, যারা কাল (তৃতীয় দিন) এখানে খেলা দেখার জন্য আসতে চেয়েছিলেন। আশা করি পরবর্তীতে আবারও এখানে হাউজফুল দেখা যাবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *