মনিরের মৃত্যু: শাকিবকে রত্নার খোলা চিঠি

অনলাইন ডেক্স :

কয়েক দিন আগে শাকিব খান অভিনীত ‘তাণ্ডব’ সিনেমার শুটিং সেটে স্টান্টম্যান মনির হোসেন অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। মনিরের মৃত্যু শোক ছড়িয়েছে গোটা চলচ্চিত্রাঙ্গনে।    

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকরা মনিরকে যখন মৃত ঘোষণা করেন, তখন সহকর্মীদের কেউ তার পাশে ছিলেন না। সবচেয়ে বেদনার ব্যাপার— শুটিং সেটে উপস্থিত থাকার পরও একবারের জন্য হাসপাতালে যাননি সুপারস্টার শাকিব খান। এমনকি, মনিরের পরিবারের দিকেও সাহায্যের হাত বাড়াননি। এসব খবর বাইরে আসার পর ক্ষোভ প্রকাশ করছেন নেটিজেনরা। এবার কড়া ভাষায় সমালোচনা করে শাকিবের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি দিলেন রত্না। নিজের ফেসবুকে দীর্ঘ চিঠিটি পোস্ট করেছেন এই নায়িকা।

রত্নার এই চিঠি শুধু ক্ষোভ নয়, যেন গোটা ইন্ডাস্ট্রির বেদনাবিধুর ভাষ্য। রত্না তার চিঠিতে বলেন, “সুপ্রিয় খান সাহেব! এই যে যুগের পর যুগ হাততালি পেয়ে যান, ভিলেনের ওপরে উড়ে এসে পড়েন, নায়িকাকে ভিলেন থেকে বাঁচান, তার পুরো কৃতিত্ব কিন্তু দর্শক না জানলেও আপনার আমার জানা। কাল আপনার ‘তাণ্ডব’ সিনেমার সেটে মনির মারা গেলেন। আপনি একবারও তার পাশে দাঁড়ালেন না। এটা নতুন নয়, আপনি কখনো পেছনের গল্প মনে রাখেন না। এখন সময় এসেছে পর্দায় নয়, বাস্তবে নায়ক হয়ে ওঠার। সিনেমা থেকে অনেক কিছু নিয়েছেন খান সাহেব, এবার দিতে শিখুন। মনিরের পরিবারের জন্য কিছু করুন, এটুকুই আশা।” 

শাকিব খানকে খানিকটা কটাক্ষ করে রত্না বলেন, “আপনার প্রেমিকা প্রায়োরিটি বরাবরই ছিল নায়িকা, অনেক উঠতি নায়িকার স্বপ্ন ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, বেকারত্বকে বরণ করে আপনার চাইতেও অনেক কর্মঠ নায়িকা দেশ ছেড়েও চলে গিয়েছিল। এটা অবশ্য আপনার দোষ না, পর্দার নায়ক হিসেবে আপনি সত্যিই অতুলনীয়-অসাধারণ, সেটা নিয়ে দুঃখ নেই।” 

রুপালি পর্দার পাশাপাশি বাস্তব জীবনে নায়ক হয়ে ওঠার আহ্বান জানিয়ে রত্না বলেন, “এখন বাস্তবে নায়ক হয়ে দেখান, সিনেমা থেকে অনেক পেয়েছেন অনেক নিয়েছেন। এখন দিতে শিখুন। যতই ইংরেজি শিখেন পাকিস্তানি ভাষা বলতে পারেন আর হিন্দি ভাষা বলে বাহবা পান। আপনি কিন্তু বাংলা চলচ্চিত্র আর বাংলাদেশেরই একজন মানুষ।” 

প্রয়াত স্টান্টম্যান মনিরের পরিবারের জন্য কিছু করার আহ্বান জানিয়ে রত্না বলেন, “আজকের এই শাকিব খান হওয়ার পিছনে, যে অবদানগুলো ছিল, আর কেউ না জানলেও আপনি কিন্তু জানেন। সব ভুলে যান দুঃখ নেই। কিন্তু যারা এখনো আপনার সাথে লেগে আছে, তাদেরকে ভুলে যাবেন না, তাদের পাশে একটু দাঁড়াবেন আশা করছি। স্টানম্যান মনিরের পরিবারের জন্য অবশ্যই কিছু করবেন প্রত্যাশা রাখলাম।”

নারায়ণগঞ্জের সন্তান স্টান্টম্যান মনির। সিনেমার ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্যগুলো আড়ালে থেকে বাস্তবে রূপ দিতেন। তার শেষ বিদায়টাও খুব নীরবে হয়ে গেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *