এনটিআরসির নিয়োগ বিধিতে বিরাট পরিবর্তন, বিজ্ঞপ্তি শিগগিরই

অনলাইন ডেস্ক

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা আবারও পরিবর্তন করা হচ্ছে। এর ফলে সদ্য তৈরিকৃত বিধিমালাটা পুনরায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংশোধনের জন্য পাঠানো হবে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের একটি সূত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) নিয়োগ পরীক্ষায় ভাইভার নম্বর যুক্ত করতে অনুরোধ করেছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম।

এজন্য বিধিমালাটি পুনরায় সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিধি সংশোধনের পর ১৯তম শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে এনটিআরসিএর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দিন থেকে বয়স গণনাসহ বেশ কিছু পরিবর্তনে এনে বিধি সংশোধন করা হয়েছিল। বিধিটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হয়ে সচিব কমিটিতে পাশ হয়েছিল।

তবে সেই বিধি আবারও সংশোধন করতে হবে। এবং সংশোধনীতে ভাইভার নম্বর যুক্ত করা হবে। শিগগিরই বিধি সংশোধনের কার্যক্রম শুরু হবে।’
পুনরায় বিধি সংশোধনের ফলে নভেম্বরের মধ্যে ১৯তম শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা সম্ভব হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘বিধি সংশোধন করতে গেলে ১৯তম নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু করতে বিলম্ব হবে।

বিষয়টি এনটিআরসিএকেও অবহিত করা হয়েছিল। তবে যেহেতু ভাইভার নম্বর নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে; সেহেতু এটি বিধিতে যুক্ত হওয়াকে আমরা ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। বিধি পরিবর্তন করে পরিপত্র জারি করতে কিছুটা সময় লাগবে। ফলে নভেম্বরের মধ্যে ১৯তম নিয়োগের কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে কি না সেটি এই মুহূর্তে বলা মুশকিল।’

এনটিআরসিএর সংশোধীত বিধিমালা অনুযায়ী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় থাকবে দুটি ধাপ—বাছাই (নির্বাচনী) পরীক্ষা ও মৌখিক পরীক্ষা।

প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচনী পরীক্ষা, যা এমসিকিউ ভিত্তিক হতে পারে। এ পরীক্ষার বিষয় ও নম্বর নির্ধারণ করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্য থেকে শূন্য পদের দ্বিগুণ প্রার্থীকে ডাকা হবে মৌখিক পরীক্ষার জন্য।
দ্বিতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা হবে ২০ নম্বরের। উভয় ধাপেই উত্তীর্ণ হতে ন্যূনতম ৪০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। তবে চূড়ান্ত মেধাতালিকা প্রস্তুত হবে শুধুমাত্র নির্বাচনী পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে। মৌখিক পরীক্ষার পর ফল প্রকাশ করা হবে এবং সেখানে শূন্য পদের অতিরিক্ত ২০ শতাংশ প্রার্থীর নামও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণরা তিন বছরের জন্য একটি সনদ পাবেন। এ সনদধারীরাই সরাসরি নিয়োগ পাওয়ার জন্য যোগ্য হবেন।
নতুন বিধিমালায় নিয়োগের বয়সসীমা ৩৫ বছরই বহাল থাকছে। তবে বয়স গণনা করা হবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দিন থেকে। এর ফলে সনদ পেতে পেতে কারো বয়স ৩৫ বছর অতিক্রম করলেও তারা চাকরির জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

বর্তমানে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ থাকা সত্ত্বেও প্রার্থীদের দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয়। এনটিআরসিএ’র সুপারিশ পাওয়ার পরও নানা জটিলতা তৈরি হয়। নতুন বিধিমালা এসব জটিলতা দূর করার উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা হচ্ছে।

জানতে চাইলে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘পরিবর্তিত পদ্ধতিতে পুরো প্রক্রিয়া তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর হবে। এতে আইনি জটিলতা কমবে এবং নিয়োগ কার্যক্রমও দ্রুত শেষ করা সম্ভব হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *