ঘুষ ছাড়া ফাইল নড়ে না কুর্শা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে

অনলাইন ডেস্ক

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ঘুষের বিনিময়ে জমির খাজনা কমিয়ে দেওয়াসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

রোববার (৯ নভেম্বর) কাউনিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অংকন পাল অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শিবু মৌজার জে.এল. নং ৬০, আর.এস. খতিয়ান নং ৭০৫ এর দাগ ৭০৮৮ এর শ্রেণি ‘বাড়ি’। ওই জমির ভূমি উন্নয়ন কর সমন্বয় করতে গেলে ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান সমন্বয় বাবদ ৫ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে ভুক্তভোগী ৩ হাজার টাকা প্রদান করেন। তবে খাজনা আদায় রশিদে তা কমিয়ে মাত্র ১ হাজার ৬১ টাকা দেখান মিজানুর রহমান।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগী আশরাফুল ইসলাম বলেন, জমির খারিজ, নামজারি, খাজনা প্রদান কিংবা রেকর্ড সংশোধন- যে কাজই হোক, ঘুষ ছাড়া এই অফিসে কোনো ফাইল নড়ে না। ইউনিয়ন ভূমি অফিস এখন ঘুষ বাণিজ্যের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। সেবা পেতে হলে সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে খুশি রাখতে হয়। তাকে ঘুষ দিতে হয়, তার অফিসে রয়েছে দালালচক্র যারা জোরপূর্বক টাকা আদায় করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমন আরও অনেকে অভিযোগে বলেন, কুর্শা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে মৌখিকভাবে এক রকম খাজনা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু রসিদে উল্লেখ থাকে কম। জনগণের পকেট থেকে টাকা বের করে নিয়ে তা ব্যক্তিগত পকেটে রাখছেন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা। এসব নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে জমির কাগজপত্র গায়েব হয়ে যাবে বলে তাদের ভয়ভীতি দেখানো হয়।

ভুক্তভোগী কবির হোসেন বলেন, সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান তার কাছে খাজনা বাবদ ৫ হাজার টাকা দাবি করেন। তিনি তিন হাজার টাকা দেওয়ার পর তাকে ১ হাজার ৬১ টাকার রশিদ দেন। বেশি টাকা নিয়ে রশিদে কম লিখে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান মিজানুর রহমান।

অভিযুক্ত সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু বলব না। আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলুন।‌

কাউনিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অংকন পাল বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা মিললে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, জনগণকে সচেতন হতে হবে। এখন ভূমি সেবা সহজীকরণ হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে, অনলাইনে সেবা মিলছে।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরকে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *