পাকিস্তানের গোপন অস্ত্র নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভারতীয় জেনারেলরা

অনলাইন ডেক্স :

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগাম হামলা ঘিরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে উপমহাদেশে। ভারতের প্রাণকেন্দ্রে এখন বড় প্রশ্ন- এই হামলার বদলা কীভাবে নেবে নয়াদিল্লি? মোদি প্রশাসনের জন্য এটি কেবল নিরাপত্তা ইস্যু নয়, বরং জাতীয় মান-সম্মানের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রাজনৈতিক মহল থেকে প্রতিরক্ষা দপ্তর- সবখানেই চলছে জল্পনা-কল্পনা। প্রশ্ন উঠছে, ভারত ও পাকিস্তান কি সরাসরি যুদ্ধে জড়াবে, না কি বেছে নেবে বিকল্প কোনো কৌশল?

এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই ভারতের প্রতিরক্ষা মহলে নতুন এক দুশ্চিন্তার জন্ম দিয়েছে পাকিস্তানের একটি আধুনিক অস্ত্র। বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তান বিমান বাহিনীর যে অস্ত্রটি ভারতীয়দের ঘুম কেড়ে নিচ্ছে, তা হলো- এয়ারবর্ন ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম, সংক্ষেপে অ্যাওয়াক্স। এটি মূলত একটি উড়ন্ত রাডার, যা বিমানবাহিনীকে দেয় অনেকগুণ বাড়তি সক্ষমতা।

সম্প্রতি পাকিস্তানের ভয়ংকর অস্ত্র নিয়ে সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে ও দ্য ডিপলোম্যাট তাদের প্রকাশিত পৃথক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামাবাদের হাতে বর্তমানে অ্যাওয়াক্স সিস্টেমসহ ১১টি বিমান রয়েছে। এসব বিমান পাকিস্তানের আকাশসীমায় টহল দেয়ার সময় একটি মোবাইল কমান্ড সেন্টার হিসেবে কাজ করে। এতে বসানো রয়েছে সুইডেন-নির্মিত অত্যাধুনিক অ্যারে রাডার। ফলে মাঝ-আকাশে যখন ভারতীয় জেট বিমান ঢোকে, তখন সেগুলোকে দ্রুত শনাক্ত করে ফেলতে পারে পাকিস্তান।

ভারতীয় প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অ্যাওয়াক্সগুলোই এখন ইসলামাবাদের ‘চোখ’ ও ‘কান’। এগুলোর সাহায্যে সীমান্তে পাকিস্তানের নজরদারি ক্ষমতা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। বিশেষ করে, ভারতীয় জেট বিমান বা ক্ষেপণাস্ত্র সীমান্ত পেরোলেই সেগুলোর গতিপথ ট্র্যাক করতে পারছে পাকিস্তানি বাহিনী।

ভারতীয় বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত একাধিক কর্মকর্তা মনে করেন, অ্যাওয়াক্স ব্যবস্থার কারণেই বর্তমান সময়ে পাকিস্তান কিছুটা কৌশলগত সুবিধায় রয়েছে। কারণ, অ্যাওয়াক্স না ধ্বংস করা পর্যন্ত পাকিস্তানের আকাশসীমায় অভিযান চালানো ভারতীয় জেট বিমানের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

তারা আরও বলছেন, ভারতীয় যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রকেও চিহ্নিত করতে সক্ষম এই উড়ন্ত রাডারগুলো। এতে পাকিস্তানের হাতে থাকা বিভিন্ন এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমকে সক্রিয় করা সহজ হয়, ফলে মাঝ-আকাশেই সেই ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করার সুযোগ তৈরি হয়।

এই কারণেই প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, পেহেলগাম হামলার প্রতিশোধ হিসেবে যে কোনো অভিযানের আগে ভারতীয় বাহিনীর প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিত পাকিস্তানের অ্যাওয়াক্স বহরকে অকার্যকর করে দেওয়া। না হলে পাল্টা অভিযানে কৌশলগত সুবিধা অর্জন করা কঠিন হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *