ক্ষুধার্ত ও অভুক্ত মানুষের সংখ্যা বাড়বে : জি এম কাদের

অনলাইন ডেক্স :

বাজেট একটি সরকারের রাজনৈতিক দর্শনের প্রতিফলন ও বাস্তবায়নের অন্যতম প্রধান বাহন। সেই হিসাবে সার্বিক মূল্যায়নে বর্তমান বাজেট “ফ্যাসিবাদের দোসর ও নব্য ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক দর্শনের প্রতিফলন” বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের)।

মঙ্গলবার (৩ জুন) বাজেট প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “পতিত ফ্যাসিবাদ সরকারের বিগত বছরের বাজেটকে মোটামুটি অনুসরণ করা হয়েছে এবং ওই বাজেটের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়েছে। বিগত বাজেটকে বর্তমান বাস্তবতার নিরিখে কিছুটা কাটছাঁট করা হয়েছে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত অর্থের পরিমাণ বাড়িয়ে ধরা হয়েছে।”

মূল কাঠামো বা রাজনৈতিক দর্শনে তেমন কোনো নতুনত্ব লক্ষ্য করা যাচ্ছে না— উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, “মূল্যবোধের জায়গা থেকে প্রাক্তন সরকারের ভাবধারার বাইরে তেমন কিছু চোখে পড়ছে না।”

বর্তমান বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য নয়— উল্লেখ করে জি এম কাদের আরও বলেন, “রাজস্ব আহরণের যে লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে বর্তমান প্রেক্ষাপটে তা অবাস্তব বা কাছাকাছি যাওয়াও সম্ভব নয়। যতদিন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না আসে এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়, ততদিন বিদেশি ঋণ বা সাহায্য পাওয়া নিয়ে সংশয় আছে। ফলে বাজেট ঘাটতির আকার অনেক বড় হবে এবং অনেক প্রয়োজনীয় খরচ মেটানো সরকারের জন্য বড় ধরনের সমস্যা হবে বলে আমরা মনে করি।”

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, “মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য কোনো স্বস্তির ব্যবস্থা নেই প্রস্তাবিত বাজেটে। প্রবৃদ্ধির নিম্নগামী অবস্থানের কারণে কর্মসংস্থান ও ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দাভাব দেখা দেবে। প্রাক্কলিত মূল্যস্ফীতি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত নয়। মূল্যস্ফীতির লাগাম টানা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। ফলে সাধারণ মানুষ দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর অবস্থায় পৌঁছাবে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির কারণে অর্ধভুক্ত ও অভুক্ত মানুষের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করছি।”

সার্বিক পরিস্থিতি ও পূর্বাভাস

সার্বিকভাবে দেশের মানুষের জন্য এ বাজেট কোনো সুখবর বা স্বস্তি আনছে না— এমন দাবি করেন জি এম কাদের। বলেন, “এই বাজেটের প্রবৃদ্ধি নিম্নগামী। প্রবৃদ্ধি নিম্নগামী হলে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা সম্ভব হবে না, স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যাহত হবে এবং কম রাজস্ব আদায় হবে। মূল্যস্ফীতির হার ৬.৫ শতাংশ ধরা হয়েছে। এপ্রিল পর্যন্ত এই হার ৯.১৭ শতাংশে আনা সম্ভব হয়েছে। সামনের দিকে মূল্যস্ফীতির হার কমবে, এর কোনো লক্ষণ আমরা দেখছি না। প্রস্তাবিত বাজেটে ক্ষুধার্ত ও অভুক্ত মানুষের সংখ্যা বাড়াবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *