অনলাইন ডেস্ক
১৯৬১ সালের ২৫ মে। জন এফ কেনেডি তখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। মার্কিন কংগ্রেসে এক বিশেষ যৌথ অধিবেশনে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এ দশক শেষ হওয়ার আগেই একজন মানুষকে চাঁদের বুকে নামিয়ে আবার নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনাটাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।’
কেনেডি যখন কথাগুলো বলছিলেন, তখন যুক্তরাষ্ট্র মহাকাশ জয়ের প্রতিযোগিতায় সোভিয়েত ইউনিয়নের চেয়ে পিছিয়ে। স্নায়ুযুদ্ধের সেই যুগে কেনেডির এ দুঃসাহসী আহ্বান মার্কিনিদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। আর এর আট বছর পর ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই চাঁদের বুকে প্রথম পা ফেলেই নভোচারী নীল আর্মস্ট্রং বলে ওঠেন, ‘একজন মানুষের জন্য ক্ষুদ্র পদক্ষেপ, আর মানবজাতির জন্য বিশাল অগ্রযাত্রা।’
ওই সময় ২ লাখ ৪০ হাজার মাইল দূরে পৃথিবীতে বসে কথাগুলো শুনেছিল শতকোটি মানুষ। টেলিভিশনের পর্দায় দেখা যাচ্ছিল সেই ঐতিহাসিক দৃশ্য। অভিযানে আর্মস্ট্রংয়ের সঙ্গী ছিলেন আরও দুই নভোচারী—বাজ অলড্রিন ও মাইকেল কলিন্স।
১৯৬১ সালে জন এফ কেনেডির বক্তব্যের পর মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা টানা পাঁচ বছর চাঁদে অভিযান চালানোর লক্ষ্যে কাজ করে। পরে ১৯৬৬ সালে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের একটি দল প্রথমবারের মতো অ্যাপোলো মিশনের জন্য একটি পরীক্ষামূলক মানবহীন মহাকাশযান পরিচালনা করে। নাসা এর মধ্য দিয়ে মূলত রকেট ও নভোযান একসঙ্গে চালানোর সক্ষমতা যাচাই করছিল। কিন্তু পরের বছরই ঘটে ভয়াবহ এক দুর্ঘটনা। ১৯৬৭ সালের ২৭ জানুয়ারি পরীক্ষামূলকভাবে মনুষ্যবাহী মহাকাশযান উৎক্ষেপণের প্রস্তুতিকালে তাতে আগুন ধরে যায়। এতে তিন নভোচারী নিহত হন। ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল স্পেস ফোর্স স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার পরও নাসা ও তাদের কর্মীরা থেমে যাননি। তাঁরা কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন।
১৯৬৮ সালের অক্টোবর মাসে সফলভাবে অ্যাপোলো ৭ উৎক্ষেপণ করা হয়। এটি ছিল প্রথম মনুষ্যবাহী অ্যাপোলো মিশন। এ মিশনে চাঁদে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অনেক জটিল প্রযুক্তির পরীক্ষা করা হয়। এরপর ডিসেম্বরে অ্যাপোলো ৮ তিন নভোচারী নিয়ে চাঁদের অন্ধকার পাশ দিয়ে ঘুরে আসে এবং চাঁদকে ১০ বার প্রদক্ষিণ করে পৃথিবীতে ফেরে।
১৯৬৯ সালের মার্চে অ্যাপোলো ৯ পৃথিবীর কক্ষপথে থেকেই প্রথমবারের মতো লুনার মডিউল পরীক্ষা করে। এরপর মে মাসে অ্যাপোলো ১০–এর তিনজন নভোচারী পুরোপুরি প্রস্তুত হওয়া একটি অ্যাপোলো মহাকাশযানে চড়ে চাঁদের চারপাশে প্রদক্ষিণ করেন। এ মিশন ছিল জুলাই মাসে চাঁদে নামার মূল অভিযানের আগে একটি মহড়া বা প্রস্তুতি মিশন।
ঐতিহাসিক যাত্রা শুরু
অবশেষে আসে চূড়ান্ত অভিযানের ক্ষণ। ১৯৬৯ সালের ১৬ জুলাই সকাল ৯টা ৩২ মিনিটে কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে যাত্রা শুরু করে অ্যাপোলো ১১। সারা বিশ্বের মানুষ তখন টেলিভিশনের পর্দায় তাকিয়ে।
ওই মহাকাশযানে ছিলেন তিন নভোচারী—নীল আর্মস্ট্রং, বাজ অলড্রিন ও মাইকেল কলিন্স। নীল আর্মস্ট্রং ছিলেন এ অভিযানের কমান্ডার। ৭৬ ঘণ্টায় প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার মাইল পথ পেরিয়ে ১৯ জুলাই অ্যাপোলো ১১ চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করে।
পরদিন ২০ জুলাই বেলা ১টা ৪৬ মিনিটে আর্মস্ট্রং ও অলড্রিনকে নিয়ে লুনার মডিউল ‘ইগল’ মূল কমান্ড মডিউল থেকে আলাদা হয়। কলিন্স তখন মূল কমান্ড মডিউলে থেকে যান। দুই ঘণ্টা পর শুরু হয় ইগলের চাঁদের বুকে নামার যাত্রা। বিকেল ৪টা ১৮ মিনিটের দিকে ইগল সফলভাবে চাঁদের দক্ষিণ-পূর্বের ‘সি অব ট্র্যাঙ্কুইলিটি’ অঞ্চলে অবতরণ করে। আর্মস্ট্রং তখন হিউস্টনে অবস্থিত নিয়ন্ত্রণকক্ষে রেডিও বার্তা পাঠান, ‘ইগল নেমেছে।’
রাত ১০টা ৩৯ মিনিটে নির্ধারিত সময়ের পাঁচ ঘণ্টা আগেই অ্যাপোলো ১১–এর লুনার মডিউলের দরজা খোলেন নীল আর্মস্ট্রং। ধাপে ধাপে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে থাকেন। মডিউলে লাগানো টেলিভিশন ক্যামেরা সেই মুহূর্ত ধারণ করে পৃথিবীতে পাঠায়। শতকোটি মানুষ উৎকণ্ঠায় দেখছিল এই ঐতিহাসিক দৃশ্য।
রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে চাঁদের বুকে প্রথম পা রাখেন আর্মস্ট্রং। রাত ১১টা ১১ মিনিটে আর্মস্ট্রংয়ের পাশে চাঁদের মাটিতে নামেন বাজ অলড্রিন। দুজন মিলে চাঁদের পৃষ্ঠের ছবি তোলেন, একটি মার্কিন পতাকা গেঁথে দেন, কিছু বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালান এবং হিউস্টনের নিয়ন্ত্রণকক্ষের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেন। অবশ্য জন এফ কেনেডি তখন আর জীবিত ছিলেন না। রিচার্ড নিক্সন ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
২১ জুলাই রাত ১টা ১১ মিনিটে (২০ জুলাই দিবাগত রাত) ওই দুই নভোচারী লুনার মডিউলে ফিরে আসেন এবং দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েন। বেলা ১টা ৫৪ মিনিটে ইগল মডিউল কক্ষপথে অপেক্ষমাণ কমান্ড মডিউলের দিকে রওনা করে।
আর্মস্ট্রং ও অলড্রিন চাঁদের বুকে একটি স্মারক ফলক রেখে আসেন। সেখানে লেখা, ‘জুলাই, ১৯৬৯। পৃথিবী গ্রহ থেকে মানুষ প্রথমবার এ চাঁদের বুকে পা রেখেছে। সমস্ত মানবজাতির শান্তির বার্তা নিয়ে আমরা এসেছি।’
বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিটে ইগল সফলভাবে কমান্ড মডিউলে ফেরত আসে। আর্মস্ট্রং ও অলড্রিন আবার মাইকেল কলিন্সের সঙ্গে যুক্ত হন। এরপর ২২ জুলাই রাত ১২টা ৫৬ মিনিটে অ্যাপোলো ১১ পৃথিবীর পথে রওনা দেয়। ২৪ জুলাই দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে তাঁরা প্রশান্ত মহাসাগরে নিরাপদে অবতরণ করেন।
ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ও পাল্টা যুক্তি
চাঁদের বুকে মানুষের সফল অভিযানের কয়েক বছর পর কিছু মানুষ দাবি করতে শুরু করেন যে ঘটনাটি ভুয়া ছিল। তাঁদের দাবি, মার্কিন সরকার সোভিয়েতদের সঙ্গে মহাকাশ প্রতিযোগিতায় জিততে এমন ঘটনা সাজিয়েছে। ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি এ ধরনের ষড়যন্ত্র তত্ত্ব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
এসব তত্ত্বে দাবি করা হয়, চাঁদে মানুষের পদচারণ প্রকৃতপক্ষে একটি বড় ধোঁকাবাজি! যুক্তরাষ্ট্র সরকার নাকি সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে মহাকাশ প্রতিযোগিতায় জেতার জন্যই চাঁদে অবতরণের মিথ্যা নাটক সাজিয়েছে। বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন সময় এ দাবিকে ভুল প্রমাণ করলেও এ তত্ত্ব আজও বহু মানুষের বিশ্বাসে টিকে আছে। তেমনই কয়েকটি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হলো:
‘পতাকা কেন উড়ছিল’
উল্লেখযোগ্য একটি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হলো, অ্যাপোলো ১১ মিশনের তোলা ছবিতে মার্কিন পতাকাটি দেখলে মনে হয়, সেটা বাতাসে উড়ছে। কিন্তু চাঁদে তো কোনো বাতাসই নেই। তবে এমন দেখায় কেন?
জ্যোতির্বিজ্ঞানী রিক ফিয়েনবার্গ বলেন, এর সহজ উত্তর, পতাকাটি প্রকৃতপক্ষে উড়ছিল না। কারণ, এটি সাধারণ কোনো পতাকা ছিল না। যদি নভোচারীরা চাঁদে সাধারণ কাপড়ের পতাকা লাগাতেন, তবে সেটা ঝুলে থাকত। এতে ছবি খুব ভালো দেখাত না। তাই নাসা এমনভাবে পতাকার নকশা তৈরি করেছিল, যেন সেটিকে দেখতে দাঁড়িয়ে আছে বলে মনে হয়।
বাঁকা রডের সাহায্যে পতাকাটি টানটান করে রাখা হয়েছিল। এমনভাবে এর নকশা করা হয়েছিল, যেন পতাকাটি খুঁটির দিক থেকে সোজা ছড়িয়ে থাকে। রডটিকে বাড়ানো-কমানোর ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু অ্যাপোলো ১১ মিশনের নভোচারীরা সেই রড পুরোপুরি বাড়াতে পারেননি। তাই ছবিগুলোতে পতাকায় ঢেউয়ের মতো ভাঁজ দেখা যায়, মনে হয় পতাকাটি বাতাসে উড়ছে।
তবে ভিডিওতে দেখা যায়, পতাকাটি শুধু তখনই নড়ছিল, যখন নভোচারীরা সেটি চাঁদের মাটিতে পুঁতে দিচ্ছিলেন। তাঁরা সরে আসার পর পতাকা আগের মতোই বাঁকানো অবস্থায় থেকে যায়। কারণ, সেই রডটা পুরোটা সোজা হয়নি, এতে পতাকাটাও এক পাশে একটু বাঁকা হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল।
‘চাঁদের আকাশে তারা নেই কেন’
আরেকটি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হলো, চাঁদের আকাশে কোনো তারা দেখা যাচ্ছে না।
চন্দ্র অভিযানের ছবিগুলো দেখে অনেকেই এ প্রশ্ন তোলেন। রিক ফিয়েনবার্গ মনে করেন, এই প্রশ্নের উত্তর খুব সহজ। তাঁর মতে, চাঁদের আকাশে তারা ছিল, কিন্তু ছবিতে দেখা যায়নি। যাঁরা ক্যামেরা চালাতে জানেন, তাঁরা সহজেই বুঝবেন, কেন এমন হয়েছে।
ফিয়েনবার্গ ব্যাখ্যা করে বলেন, চাঁদে নভোচারীদের যে ছবিগুলো তোলা হয়েছিল, তার সবই দিনের আলোয় তোলা। চারপাশে সূর্যের আলোয় সবকিছু খুব উজ্জ্বল ছিল। আর নভোচারীরা উজ্জ্বল সাদা রঙের যে পোশাক পরেছিলেন, সেগুলোও অনেকটা আলো প্রতিফলিত করে। চাঁদের উজ্জ্বল পৃষ্ঠ ঠিকভাবে ধারণ করতে নভোচারীদের ক্যামেরার এক্সপোজার কম রাখা হয়েছিল। এই কম এক্সপোজারের কারণে তুলনামূলকভাবে কম আলোযুক্ত তারা ধরা পড়ে না। এ কারণে দূরের হালকা তারাগুলো ক্যামেরায় ধরা পড়েনি।
চাঁদের মাটিতে তোলা ছবিতে অনেক বস্তুকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। এমনকি ছায়ার মধ্যে থাকলেও সেগুলো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিকদের দাবি, যদি সূর্যই একমাত্র আলোর উৎস হতো, তবে ছায়ার ভেতরে কিছুই দেখা যেত না। তাঁদের মতে, ছায়ার মধ্যেও বস্তু দেখা যাওয়ার মানে—হলিউডের মতো আলোকসজ্জা ব্যবহার করে নাসা এ দৃশ্য তৈরি করেছে।
তবে এ দাবির কোনো ভিত্তি নেই। কারণ, সূর্য চাঁদের প্রধান আলোর উৎস হলেও সেটিই একমাত্র উৎস নয়। চাঁদের মাটিও সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে। মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী রিক ফিয়েনবার্গ এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘সূর্যের আলো মাটিতে প্রতিফলিত হয়ে এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ে যে তার একটা ক্ষুদ্র অংশ ছায়ার ভেতরও পৌঁছায়। পরিমাণে কম হলেও ছবি তোলার জন্য এটা যথেষ্ট।’
একই কারণে অনেক ছবিতে দেখা যায়, চন্দ্রপৃষ্ঠে আর্মস্ট্রং ও অলড্রিনের রেখে আসা জিনিসপত্র ছায়ায় থাকলেও তা পরিষ্কারভাবে দেখা গেছে। এতে কোনো ‘স্টুডিও আলোর’ দরকার হয়নি।
‘চাঁদে অবতরণের ঘটনা ভুয়া। কারণ, ছবিতে আর্মস্ট্রংয়ের ক্যামেরা দেখা যাচ্ছে না’—কিছু ষড়যন্ত্র তত্ত্বপ্রেমী এমন যুক্তিও দেখিয়ে থাকেন।
তবে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, আর্মস্ট্রং নিজেই ওই বিখ্যাত ছবি তুলেছিলেন, যেখানে অলড্রিনকে দেখা যাচ্ছে। ছবিতে অলড্রিনের হেলমেটের মধ্যে আর্মস্ট্রংয়ের প্রতিচ্ছবি স্পষ্ট দেখা যায়। তবে সংশয়বাদীরা বলেন, প্রতিচ্ছবিতে আর্মস্ট্রংয়ের হাতে কোনো ক্যামেরা দেখা যাচ্ছে না। অন্য কেউ ছবিটি তুলেছেন—অর্থাৎ সবই সাজানো।
কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এ দাবি সত্য নয়। আর্মস্ট্রং চাঁদের মাটিতে হাঁটার সময় হাতে কোনো সাধারণ ক্যামেরা ধরে থাকতে পারেননি। কারণ, তাঁর স্পেসস্যুট ছিল বেশ ভারী। তাই তাঁর ব্যবহৃত ক্যামেরা বসানো হয়েছিল স্পেসস্যুটের সামনের অংশে। অর্থাৎ বুকের কাছে। আর ছবির প্রতিচ্ছবিতে তাঁর হাত ঠিক সেই জায়গাতেই আছে।
‘পায়ের ছাপে মিল নেই’
আবার অনেকেই বলেন, চাঁদের মাটিতে যে পায়ের ছাপ দেখা গেছে, সেটা নাকি মিথ্যা। কারণ, নীল আর্মস্ট্রংয়ের যে স্পেসস্যুট এখন জাদুঘরে আছে, তাঁর জুতার নিচের দাগ নাকি সেই ছাপের সঙ্গে মিলছে না।
তবে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, কথাটা আসলে ঠিক নয়। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চাঁদের মাটিতে যে পায়ের ছাপ আমরা ছবিতে দেখি, সেটা আর্মস্ট্রংয়ের নয়, অলড্রিনের জুতার ছাপ। আর সেটা ছিল তাঁর ‘লুনার ওভারশু’ নামের বিশেষ জুতার ছাপ। চাঁদের মাটিতে ঠিকমতো চলাফেরা করার জন্য তাঁরা দুজন স্পেস বুটের ওপর আবার একটা বিশেষ ধরনের জুতা পরেছিলেন। এই জুতায় ছিল মোটা তলা, যাতে ধুলোয় পা পিছলে না যায়।
এ বিশেষ জুতাগুলো পরে নভোচারীরা চাঁদে হেঁটেছিলেন। আর অভিযান শেষে ওজন কমানোর জন্য সেগুলো চাঁদের মাটিতেই ফেলে রেখে এসেছিলেন।
চাঁদে পরবর্তী সময়ে যেসব নভোযান পাঠানো হয়েছে, সেগুলো থেকে অ্যাপোলো ১১ অবতরণের জায়গার অনেক ছবি তোলা হয়েছে। নাসা সেসব ছবি প্রকাশও করেছে। অ্যাপোলো-১১ যেখানে নেমেছিল, ঠিক সেখানকার কিছু ছবিতে ওই অভিযানের অনেক প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফিয়েনবার্গ মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ অভিযানে যেসব বিশাল অগ্রগতি হয়েছে, তা অস্বীকার করা এবং এসব মিথ্যা তত্ত্বে বিশ্বাস করা মূলত একটি আদর্শগত বা রাজনৈতিক ব্যাপার। বিজ্ঞানের সঙ্গে এর তেমন সম্পর্ক নেই।













Leave a Reply