নিজস্ব প্রতিবেদক:
গণশুনানী ও প্রচারণা ছাড়াই গণবিরোধী প্রিপেইড মিটার সংযোগের বিরুদ্ধে রংপুরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধন থেকে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সংযোগ দেয়া প্রি-পেইড মিটার খুলে পুরাতন মিটার স্থাপনের দাবী জানানো হয়। বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর শাপলা চত্তরে ঘন্টাব্যাপী মানবন্ধনে এসব কথা বলেন ভূক্তভোগী গ্রাহকরা।
এসময় মানববন্ধন বক্তব্য রাখেন, বিদ্যুৎ গ্রাহক প্রভাষক দেলোয়ার হোসেন, ক্বারী আতাউর হক, লুৎফর রহমান চৌধুরী লিখন, শহিদুল ইসলাম খোকন, মনিরুল ইমলাম মিন্টু, সাইদুল ইসলাম, আশরাফ হোসেন, নুরুল ইসলাম ভোলা ও ফেরদৌস আলমসহ বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকরা।
বক্তারা বলেন, অযৌক্তিকভাবে বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার স্থাপন করে গ্রাহকদের হয়রানি করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তারা গ্রাহকদের সেবা না দিয়ে উল্টো প্রিপেইড মিটার স্থাপনের মাধ্যমে লুটপাট শুরু করেছে। বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ থাকলেও মিটার থেকে টাকা কাটা হয়। তাছাড়া একাধিকবার কার্ড ক্রয়ের ঝামেলা পোহাতে হয় এবং হঠাৎ মিটার লক হয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এই প্রিপেইড মিটারের লক লাগলে বার বার বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তাদের কাছে ধরনা দিয়েও সমাধান হয় না।
এর আগে নগরীর কলেজ রোডস্থ নেসকোর প্রধান কার্যালয়ের সামনে বিদ্যুৎ গ্রাহক স্বার্থ রক্ষা কমিটির ব্যানারেও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বক্তব্য রাখেন সিপিবির জেলা সভাপতি ভাষা সৈনিক ও বীরমুক্তিযোদ্ধা কমরেড শাহাদৎ হোসেন, বিএনপি মহানগর আহবায়ক কমিটির সদস্য মির্জা বাবর বাবলু, বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুরের আহবায়ক কমরেড আনোয়ার হোসেন বাবলু, বামজোট রংপুরের সমন্বয়ক ও বাসদ জেলার আহবায়ক কমরেড আব্দুল কুদ্দুস, সিপিবি রংপুরের সাধারণ সম্পাদক কাফি সরকার, বাংলাদেশ জাসদ মহানগর শাখার সভাপতি গৌতম রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক মিরাজুন নবী মিলন, বিদ্যুৎ গ্রাহক স্বার্থ রক্ষা কমিটির নেতা কামরুল হাসান টিটু।
এসময় বক্তারা অভিযোগ করেন, নর্দান ইলেকট্রিসিটি কোম্পানি লিমিটেড গ্রাহকদের মতামত না নিয়ে কিংবা গণশুনানী না করে প্রি-পেইড মিটার সংযোগ একপ্রকার চাপিয়ে দিচ্ছে। রংপুরের সর্বস্তরের জনগণ এটি প্রত্যাখ্যান করেছে। গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় ৪ দফা দাবী উপস্থাপন করে গত ১৭ ডিসেম্বর নেসকোর প্রধান প্রকৌশলী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়, সেসময় তিনি জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহে গনশুনানী করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তাই গণশুনানী না করে আর কোন প্রিপেইড মিটার সংযোগ রংপুরে করতে দেয়া হবে না বলে হুশিয়ারী দেন বক্তারা।
রংপুর মহানগর নাগরিক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট পলাশ কান্তি নাগ বলেন, প্রিপেইড মিটার সম্পর্কে গ্রাহকরা কিছুই জানে না। গণশুনানি ও গ্রাহকদের মতামত ছাড়াই এই মিটার স্থাপন করা হচ্ছে। এ নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
এদিকে নেসকো রংপুর সার্কেল-১ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাসনাত জামান বলেন, গণশুনানি অচিরেই করা হবে। তাছাড়া জেলার সমন্বয় সভা ও বিভাগীয় কমিশনার এবং সিটি কর্পোরেশনের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। প্রিপেইড মিটারের ভালো দিক রয়েছে, তবে অনেকে হয়ত ভালোভাবে বিষয়টি জানেন না, যার কারণে গ্রাহক পর্যায়ে নেতিবাচক আলোচনা হচ্ছে। যখন বিষয়টি পরিষ্কার হবে, তখন আর নেতিবাচক আলোচনা থাকবে না। এ সময় তিনি সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
উল্লেখ্য রংপুর নগরীতে নেসকো বিদ্যুত বিতরণ বিভাগ ৩ এর আওতায় ২২ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে প্রিপেইড মিটার সংযোগ। রংপুরের অন্যান্য বিতরণ বিভাগেও সংযোগ শুরু হয়েছে। সীমিত পরিসরে সংযোগেই গ্রাহকদের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।













Leave a Reply