কর্মীদের কারাগারে সন্ত্রাসীদের মতোই রাখা উচিত : বেন-গভির

অনলাইন ডেস্ক

ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির রবিবার বলেছেন, সামাজিক আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ ও অন্যান্য নৌবহর কর্মীরা, যাদের ইসরায়েল আটক করেছে, তাদেরকে কারাগারে সন্ত্রাসীদের মতোই রাখা উচিত।

এক বিবৃতিতে বেন-গভির এ মন্তব্য করেন। এর আগে খবর প্রকাশিত হয়, গত সপ্তাহে গাজায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে নৌবহরে অংশ নেওয়ার কারণে ইসরায়েল প্রায় ৪৫০ জন কর্মীকে আটক করে। এর মধ্যে থুনবার্গ ও অন্যদের কারাগারে কঠোর আচরণের শিকার হতে হয়েছে।
বেন-গভির বলেন, ‘যে সন্ত্রাসকে সমর্থন করে, সে-ই সন্ত্রাসী এবং তার সন্ত্রাসীদের মতোই আচরণ পাওয়া উচিত।’

তিনি আরো বলেন, ‘যদি তারা ভেবে থাকে যে এখানে এসে লালগালিচা আর উৎসবমুখর অভ্যর্থনা পাবে, তবে তারা ভুল করেছে।’

বেন-গভির জানান, তিনি কেতজিয়ত কারাগার পরিদর্শন করেছেন, যেখানে বহু কর্মীকে আটক রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি গর্বিত যে আমরা এই নৌবহর কর্মীদের সন্ত্রাস সমর্থক হিসেবে দেখি।
তাদের কেতজিয়তের পরিবেশ বুঝতে হবে এবং ইসরায়েলের দিকে আসার আগে দু’বার ভাবতে হবে। এটিই নিয়ম।’
তিনি আরো যোগ করেন, ‘আমি কারাগারে গিয়ে দেখেছি, ইসরায়েলি কারা বিভাগের কর্মকর্তারা কমিশনার কোবি ইয়াকোবি ও আমার নীতি অনুযায়ী কাজ করেছেন।’

বেন-গভির দাবি করেন, তিনি নৌবহরে কোনো মানবিক ত্রাণ দেখেননি।
তিনি বলেন, ‘আমি শুধু একটি শিশুখাদ্যের টিন দেখেছি এবং একদল মানুষকে, যারা মানবাধিকার কর্মীর ছদ্মবেশে এসেছিল, আসলে তারা সন্ত্রাসকে সমর্থন করতে ও আমাদের ব্যঙ্গ করতে এসেছিল।’
তবে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বেন-গভিরের বক্তব্যের পরই জানায়, থুনবার্গ ও অন্য আটককৃতদের প্রতি দুর্ব্যবহারের অভিযোগগুলো ‘ধৃষ্ট ও মিথ্যা।’ মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য, ‘সকল আটককৃতের আইনি অধিকার পুরোপুরি রক্ষা করা হয়েছে।’

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘অদ্ভুত ব্যাপার হলো, গ্রেটা নিজে ও অন্যান্য আটককৃতরা তাদের নির্বাসন দ্রুত সম্পন্ন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন এবং নিজেদের হেফাজতে থাকার সময় বাড়িয়েছেন।’

মন্ত্রণালয়ের দাবি, ‘গ্রেটা এ ধরনের হাস্যকর ও ভিত্তিহীন অভিযোগ নিয়ে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো অভিযোগও জানাননি—কারণ এসব ঘটেনি।
তবে দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, থানবার্গকে একটি পোকামাকড়-আক্রান্ত কক্ষে রাখা হয়েছে, যেখানে খাবার ও পানি ছিল অপ্রতুল।

দুই আটককৃত—মালয়েশিয়ার নাগরিক হাজওয়ানি হেলমি ও মার্কিন নাগরিক উইন্ডফিল্ড বিভার বিমানবন্দরে রয়টার্সকে জানান, তারা থুনবার্গের সঙ্গে দুর্ব্যবহার হতে দেখেছেন। তাদের দাবি, থুনবার্গকে ধাক্কা দেওয়া হয়েছিল এবং তাকে জোর করে ইসরায়েলের পতাকা গায়ে জড়াতে বাধ্য করা হয়েছিল।

হেলমি বলেন, আটককৃতদের পরিষ্কার খাবার বা পানি দেওয়া হয়নি, এমনকি ওষুধ ও ব্যক্তিগত জিনিসপত্রও কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে বিভার বলেন, থুনবার্গের সঙ্গে ‘ভয়াবহভাবে ব্যবহার করা হয়েছে’ এবং ‘প্রচারণার কাজে লাগানো হয়েছে।’ তার ভাষায়, ‘বেন-গভির আসার সময় গ্রেটাকে ধাক্কা দিয়ে একটি ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *