অনলাইন ডেস্ক
নবজাতক নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে ময়মনসিংহ শহরের নানা জায়গায় আশ্রয় নেন মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণী। পিতৃ পরিচয়হীন ফুটফুটে নবজাতকটি দেখতে ভিড় জমায় লোকজন। নানা প্রশ্নে জর্জরিত হয়ে বেসামাল হয়ে ওঠেন তিনি। অনেকে কৌশলে নবজাতকটিকে নিয়ে যেতে চায়।
ফলে নিরাপদ আশ্রয় খোঁজেন মা।
একপর্যায়ে আজ বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) নিজের নবজাতককে আগলে ধরে ময়মনসিংহের নান্দাইল থানার ভেতর সেন্ট্রি কক্ষে আশ্রয় নেন।
এদিকে, খবর পেয়ে সন্ধ্যার পর নান্দাইল থানায় যান এ প্রতিবেদক। সেখানে গিয়ে দেখতে পান মূল ফটকের পাশে অবস্থিত সেন্ট্রিকক্ষে নবজাতককে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন মা।
কেউ কাছে গেলেই তার দিকে তেড়ে যাচ্ছেন। মানসিক ভারসাম্যহীন এই মা বলেন, ‘দেহুইনছে আমার ছেড়াডারে নিতোগা চায়। এরে দেয়াললে আমি বাঁচবাম কিবায়। এ (শিশু) তো আমারে দেখবো, খাওয়াইবো।
অহন আমার আর কিছু লাগতো না ‘ এখানে (থানায়) কেন আসছেন?- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘অহন কেউ নিলেগা (নবজাতককে) পুলিশরে ডাক দিয়াম।’
জানা যায়, বেশ কয়েক মাস আগে নান্দাইল উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করতেন ওই তরুণী। একপর্যায়ে তিনি সন্তান সম্ভাবা হয়ে পড়েন। এরপর আর তাঁকে দেখা যায়নি। দুই দিন আগে হঠাৎ নান্দাইল নতুন বাজারে চলে আসেন নবজাতককে নিয়ে।
শিশুটির বয়স আনুমানিক দুই মাস। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বারান্দায় অথবা সড়কের পাশে গাছতলায় শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে বসে থাকেন। সন্তানকে নিয়ে হাসেন, আদর করেন। কখনো নিজের পরনের জামার ভেতর ঢুকিয়ে রাখেন। বাড়ি কোথায় বলতেই একবাক্যে বলেন আঠারবাড়ি।
আঠারবাড়ি পাশের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার একটি ইউনিয়ন। সন্তানের নাম জানতে চাইলে নিমেষেই কয়েকটি নাম বলেন। সন্তানের বাবা কে- জানতে চাইলে হাসতে থাকেন তিনি। কার দিকে থাকিয়ে কাকে কখন চিহ্নিত করেন- এই ভয়ে অনেকেই তখন দূরে সরে যায়।
জানতে চাইলে নান্দাইল থানার ওসি খন্দকার জালাল উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানিয়েছি। তাঁরাই ওই নারীর সব ব্যবস্থা করবেন। আমার পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হবে।’
Leave a Reply