স্বাস্থ্য সনদ ছাড়াই পশু জবাই, অ্যানথ্রাক্সে বাড়ছে সংক্রমণ

অনলাইন ডেস্ক

রংপুর ও আশপাশের জেলাগুলোতে আবারও অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও আইন অনুযায়ী মাংসের ব্যবসার আগে সিভিল সার্জন থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা সনদ ও প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে লাইসেন্স পাওয়া বাধ্য, কিন্তু অধিকাংশ ব্যবসায়ীর কাছে এসব নেই। অনেকে আইনটিই জানে না। এ কারণে রোগ নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়েছে।

চিকিৎসক ও সচেতন মহল উদ্বিগ্ন।
সম্প্রতি পীরগাছা উপজেলায় অ্যানথ্রাক্স রোগী শনাক্ত হয়েছে। রোগটি ছড়িয়ে পড়েছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায়। ওই এলাকায় প্রতিদিন প্রায় ৩০-৩৫টি স্পটে ৬০-৬৫টি গরু ও ছাগল জবাই হয়।
কিন্তু সেখানেও লাইসেন্স ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা নেই। মিঠাপুকুরের ইমাদপুর ইউনিয়নে অসুস্থ গরুর মাংস থেকে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে এবং সংস্পর্শে দুই জনের শরীরে এই রোগ ধরা পড়ে। মিঠাপুকুর উপজেলায় সাত জনের শরীরে রোগের উপসর্গ দেখা গেছে, যার মধ্যে দুই জনের পরীক্ষায় পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। তারা বর্তমানে চিকিৎসাধীন।

প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও ইউপি কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য পরীক্ষা, উদ্ভূত সভা, লিফলেট বিতরণ ও টিকাদান কর্মসূচি চালাচ্ছে। চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলছেন, মাংস ভালোভাবে সিদ্ধ করে খেতে হবে এবং রোগগ্রস্ত পশুর রক্ত-মাংসের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা জরুরি। সুন্দরগঞ্জ বাজার ইজারাদার মো. শুকুর আলী উল্লেখ করেছেন, বাজারে নিয়মিত পরীক্ষা চালু রয়েছে। কিন্তু সব স্থানে তা প্রযোজ্য হওয়া উচিত। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বিপ্লব কুমার দে বলেন, ‘রাসায়নিক পরীক্ষা ছাড়া কোনো পশু জবাই করা হবে না এবং ইতিমধ্যে এমন নির্দেশনা দিয়েছেন।

তারাগঞ্জেও একই অবস্থা। এখানে ৬০-৭০ জন মাংস ব্যবসায়ী রয়েছেন, কিন্তু কারো কাছে লাইসেন্স নেই। একজন ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, তিনি লাইসেন্সের কথা আগ পর্যন্ত জানতেন না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যানথ্রাক্স ছড়িয়ে পড়ার মূল পথ হলো রোগাক্রান্ত পশু জবাই করতে দেওয়া। তারা আশঙ্কা করছেন, যদি জনবল ও আইন প্রয়োগ ঠিকভাবে না করা হয়, তাহলে শীতের আগেই এই রোগ ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করতে পারে।

রংপুর জেলার প্রাণিসম্পদ বিভাগ ইতিমধ্যে প্রায় ১,৬৫,০০০ পশুকে টিকা দিয়েছে। তারা বলছেন আতঙ্ক নেই, রোগ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ চলছে। তবে মাংস ব্যবসায়ীদের মধ্যে সচেতনতাগত উদ্যোগ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকলে, বিশাল স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *