অনলাইন ডেস্ক
একটি পরিবার—তিনটি শিশু, যার মধ্যে একটি দৃষ্টিহীন, একটি প্রতিবন্ধী, আরেকটি অসুস্থ। বাবা সুমন মিয়ার দুই হাতের হাড় ভেঙে কর্মক্ষমতা হারিয়ে গেছে, মা সাহিনুর বেগমের কণ্ঠে হতাশার দগদগে ছাপ। একসময়ের স্বপ্ন আজ শুধুই বেঁচে থাকার সংগ্রাম। এ যেন জীবনের এক নির্মম বাস্তবতা—যেখানে চিকিৎসা ও দু’মুঠো ভাত খাওয়াটাও হয়ে উঠেছে এক স্বপ্ন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আলিয়াবাদ গ্রামের বাসিন্দা সুমন ও সাহিনুর দম্পতি তাদের তিন সন্তানকে নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন অতিকষ্টে। একসময় সুমন মিয়া বিভিন্ন গ্রাম থেকে মুরগি কিনে এনে বাজারে বিক্রি করতেন। কিন্তু এক ভয়াবহ ট্রাক দুর্ঘটনায় তার দুটি হাতের হাড় ভেঙে গেলে সব কিছু এলোমেলো হয়ে যায়।
বর্তমানে তিনি একেবারেই কর্মক্ষম নন।
কানেও কম শোনেন। মাথার ওপরে এক টুকরো ভাঙা ছাউনি, ঘরে নেই প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র, নেই খাবার কেনার সামর্থ্য। তিনটি শিশুই নানা রকম স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে, অথচ প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও করানো সম্ভব হচ্ছে না।
শিশুরা বিছানায় শুয়ে থাকে, চোখে মুখে দুঃখ, ক্ষুধা আর অবহেলার ছাপ স্পষ্ট।
মা সাহিনুর বেগম বলেন,‘প্রতিবেশীদের কাছে এনে জীবন বাঁচে। ভাত-মাছ খাওয়া আমাদের কাছে এখন স্বপ্ন। কি যে কষ্ট করে চলছি ভাষায় বোঝাতে পারবো না।’
সুমন মিয়া কষ্টের সঙ্গে বলেন,‘কল্লোল ভাই কিছু টাকা দিয়েছিলেন, সেই টাকায় ছোট ছেলেকে একটু চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু বাকি বাচ্চাদের চিকিৎসা করানো আর সম্ভব হচ্ছে না।
সমাজের সহানুভূতিশীল মানুষদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছি।’
স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা ‘হোপ’-এর নির্বাহী পরিচালক আসাদুজ্জামান কল্লোল জানান, ‘হোপ–জাহেদা বারী বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সেবা কেন্দ্র এবং আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে সুমনের শিশুপুত্রের চিকিৎসায় আর্থিক সহায়তা দিয়েছি। তবে শুধু এনজিও বা ব্যক্তি পর্যায়ের সাহায্যে সব কিছু সম্ভব নয়। সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত।’
















Leave a Reply