মানুষের চলাচল এখন বন্য প্রাণীর তুলনায় ৪০ গুণ বেশি: আন্তর্জাতিক গবেষণা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বিশ্বজুড়ে মানুষের চলাচল এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যা স্থলভাগের সব বন্য স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি ও কীটপতঙ্গের সম্মিলিত চলাচলের তুলনায় প্রায় ৪০ গুণ বেশি। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক একদল বিজ্ঞানীর গবেষণায় উঠে এসেছে এই বিস্ময়কর তথ্য।

ইসরায়েলের উইজম্যান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স (WIS) সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের নেতৃত্বে পরিচালিত এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বৈজ্ঞানিক জার্নাল নেচার ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশন-এ।

গবেষক দলটির ভাষ্য অনুযায়ী, শিল্পবিপ্লবের পর গত প্রায় ১৭০ বছরে মানুষের চলাচল বা গতি বেড়েছে প্রায় ৪,০০০ শতাংশ। অর্থাৎ, শিল্পায়ন ও প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে মানুষ যে পরিমাণ ভ্রমণ, পরিবহন ও পণ্য স্থানান্তর করছে, তা অভূতপূর্ব মাত্রায় পৌঁছেছে।

এর বিপরীতে, একই সময়ে সামুদ্রিক প্রাণীদের নড়াচড়া বা স্থানান্তর কার্যক্রম প্রায় ৬০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। গবেষকদের মতে, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন, অতিমাত্রায় মৎস্য আহরণ, দূষণ ও সামুদ্রিক পরিবেশ ধ্বংসের কারণে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর গতিশীল পরিবেশে মানুষের এই অতিমাত্রার চলাচল এখন “অ্যানথ্রোপোসিন যুগ”-এর অন্যতম নিদর্শন, যেখানে মানুষই পৃথিবীর প্রাকৃতিক ব্যবস্থাকে আমূল বদলে দিচ্ছে।

গবেষণায় আরও বলা হয়, আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা, বিমান চলাচল, বৈশ্বিক বাণিজ্য ও নগরায়নের ফলে মানুষের নড়াচড়া এখন পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে শুধু প্রাণিকুল নয়, জলবায়ু ও জীববৈচিত্র্যের ওপরও গভীর প্রভাব পড়ছে।

গবেষণা দলের প্রধান বিজ্ঞানী ড. রন মিলো বলেন,

“আমরা এমন এক যুগে প্রবেশ করেছি যেখানে মানুষের চলাচলই এখন পৃথিবীর সবচেয়ে প্রভাবশালী ভূমিকায়। এটি আমাদের টেকসই ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *